অধিক ডিম উৎপাদনকারী মুরগির জাতের নাম ও বৈশিষ্ট্য
ভূমিকা : মুরগিকে আমরা সাধারণত গৃহপালিত পাখি হিসেবে পালন করে থাকি। মুরগির মাংস ডিমে প্রচুর প্রোটিন রয়েছে। মুরগির ডিম ও মাংস খেয়ে আমরা শরীরের প্রোটিনের ঘাটতি পূরণ করে থাকি। মুরগির জীবনকাল ৫ থেকে ১০ বছর পর্যন্ত হয়।
সসেক্স মুরগি :
সসেক্স মুরগি এই জাতের মুরগির উৎপত্তি হয়েছে ইংল্যান্ডে। সসেক্স মুরগি সাধারণত বাড়ির উঠানে অর্থাৎ খোলা অথবা আবদ্ধ অবস্থায় লালন পালন করা যায়। সসেক্স মুরগি খুবই শান্ত ও বন্ধুত্বপূর্ণ স্বভাবের হয়। সে কারণে এদেরকে খুব সহজেই পরিচালনা করা যায়। যেকোনো তাপমাত্রা এবং পরিবেশে এই মুরগি পালন করা যায়। বাড়ির অন্যান্য মুরগির সাথে একসঙ্গে এই মুরগি পালন করা যায় বলে নতুন খামারিদের জন্য হতে পারে এই মুরগি অত্যন্ত পছন্দের জাত। বছরে ২৫০-২৭০টি করে ডিম দিয়ে থাকে। এই জাতের মুরগির ডিমের রং ক্রিম/হালকা বাদামী রংয়ের হয়।
হোয়াইট লেগ হর্ন মুরগি :
হোয়াইট লেগ হর্ন জাতের মুরগির উৎপত্তি হয়েছে ইতালিতে। আপনি যদি নতুন খামারি হয়ে থাকেন তাহলে এই হোয়াইট লেগ হর্ন জাতের মুরগি অন্যতম। কেননা এই জাতের মুরগি বছরে প্রচুর ডিম উৎপাদন করে।হোয়াইট লেগ হর্ন মুরগি বছরে ২৮০-৩২০টি করে ডিম দিয়ে থাকে। এর ডিমের রং সাদা বর্ণের হয়। এই মুরগির ওজন ২ থেকে ২.৫ কেজি পর্যন্ত হয়। এই মুরগির পালকের রং সাদা বর্ণের হয়,আবার অন্যান্য বর্ণের ও হয়।
সোনালী মুরগি :
সোনালী জাতের মুরগির উৎপত্তিস্থল বাংলাদেশে। সোনালী মুরগি সাধারণত বিভিন্ন বর্ণের/রঙের হয়। গ্রামাঞ্চলে এই মুরগি মহিলারা খুব সহজে লালন-পালন করে। সোনালি মুরগির ওজন ১.৫ কেজি থেকে ২ কেজি পর্যন্ত হয়। এদের মাথায় ঝুঁটি চিরুনি আকৃতির হয়। সোনালি মুরগি বছরে ১৬০-২০০ কি করে ডিম উৎপাদন করে। সোনালি মুরগির ডিম সাধারণত বাদামী রঙের হয়।
আইএসএ ব্রাউন মুরগি :
আইএসএ ব্রাউন মুরগির উৎপত্তি হয়েছে ফ্রান্স।এই মুরগির পালকের রং লালচে বাদামী বর্ণের। এই মুরগির মাথার ঝুঁটি একক চিরুনি আকৃতির। আইএসএ ব্রাউন জাতের মুরগিটি অধিক ডিম উৎপাদনের জন্য সুপরিচিত লাভ করেছে।এই মুরগি বছরে প্রায় ২৫০-৩৩০টি ডিম উৎপাদন করে।আইএসএ ব্রাউন মুরগির ডিমের রং বাদামী বর্ণের হয়। আইএসএ ব্রাউন জাতের মুরগির ওজন প্রায় ২ কেজি পর্যন্ত হয়। তাই বলা যায় এই মুরগি লালন পালন করলে প্রচুর লাভবান হওয়া যাবে।
গ্রাম প্রিয়া মুরগি :
গ্রাম প্রিয়া মুরগির উৎপত্তিস্থল ভারতে।গ্রাম প্রিয়া মুরগি গ্রামের খোলা পরিবেশ লালন পালন করা যায়। এই মুরগি ওজনে অন্যান্য মুরগির তুলনায় হালকা হয়। গ্রামাঞ্চলে পশুপাখি লালন-পালন করতে গেলে দেখা যায় তারা অনেক সময় শিয়াল বেজির দ্বারা আক্রমনের শিকার হয়। গ্রাম প্রিয়া মুরগি ওজনে হালকা আর সে কারনেই তারা খুব সহজেই শিকারির হাত থেকে নিজেদের রক্ষা করতে পারে। এই গ্রাম প্রিয়া জাতের মুরগি ওজনে ১ কেজি থেকে ১.৫ কেজি পর্যন্ত হয়। প্রতিবছর এরা ১৮০-২২০ টি ডিম উৎপাদন করে থাকে।
আসিল :
আসিল মুরগির জাত বাংলাদেশে খুব কমই দেখা যায়। এই মুরগির জাত টা ভারতে বেশি দেখা যায়। বিশেষ করে ভারতের তামিল নাড়ু,ওড়িশা রাজ্যে,ছত্রিশ গড়, অন্ধ প্রদেশ এসব অঞ্চল গুলোতে বেশি দেখা যায়। আসিল জাতের মুরগি আকারে বেশ বড় ও শক্তিশালী হয়ে থাকে। এদের ওজন সর্বনিম্ন ৩ কেজি ও সর্বোচ্চ ৬ কেজি পর্যন্ত হয়। এই আসিল মুরগি বিদেশেও রপ্তানি করা হয়। আসিল মুরগির জাত কে আবার গেমিং মুরগির জাত বলে। আসিল জাতের মোরগ দিয়ে "মোরগ লড়াই" নামে এক ধরনের খেলা পরিচালনা করা হয়।
বারবু ডি'এভারবার্গ :
বারবু ডি'এভারবার্গ এই জাতের মুরগির উৎপত্তিস্থল বেলজিয়ামে। এই জাতের মুরগি গুলোর সাধারণত লেজ হয় না, অর্থাৎ এটা লেজবিহীন মুরগির একটা জাত। বারবু ডি'এভারবার্গ মুরগির জাত গুলো বেলজিয়ামের সবচেয়ে বিপন্ন মুরগির মধ্যে একটি জাত। সাধারণত লিঙ্গ ভেদে এদের ওজন দেখা যায়। মোরগ ৭০০ -৮০০ গ্রাম এবং মুরগিগুলো ৫৫০-৬৫০ গ্রাম পর্যন্ত হয়।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url